লন্ডন দৌড়াচ্ছে পাকিস্তানের রাজনীতিকরা?
গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের রাজনীতি বা সরকার কি এখন লন্ডন থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে! ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর বিরোধীরা সম্মিলিতভাবে সরকার গঠন করেছে। প্রথম কয়েকদিনে সেই সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী শপথ নেন। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদ ঝুলে থাকে। বলা হয়, এই পদ পাবেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সভাপতি বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি ঠিকই ওই পদ পেয়েছেন। কিন্তু দায়িত্ব নেয়ার আগে তিনি ছুটে গেছেন লন্ডনে। সেখানে তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। তিনি বিলাওয়ালের কানে কি বার্তা দিয়েছেন তা জানা যায়নি। ভিতরের কথা কখনো বলেন না রাজনীতিকরা।
ওই সাক্ষাতের পরে দেশে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন বিলাওয়াল আবার ইমরান খান আগাম নির্বাচন দাবি করেছেন। এ ইস্যুতে আলোচনা করতে প্রতিনিধি দল নিয়ে লন্ডনে গিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও পিএমএলএনের সভাপতি শেহবাজ শরীফ। তারা দলের মূল নেতা নওয়াজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। সেই বৈঠকে নওয়াজ শরীফ আগাম নির্বাচনের পক্ষে মত দেননি বলে শোনা যাচ্ছে। ফলে লন্ডনে বসেই পিএমএলএন সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানে আগেভাগেই নির্বাচন হবে না। ফলে প্রশ্নটা সামনে আসা স্বাভাবিক যে, তাহলে পাকিস্তানের রাজনীতি কি লন্ডন থেকে পরিচালিত হচ্ছে?
অনলাইন জিও নিউজ বলেছে, মন্ত্রীপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও দলীয় নেতাদের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার লন্ডন গিয়েছেন প্রধামনন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। তাদের উদ্দেশ্য, দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পিএমএলএনের প্রধান নওয়াজ শরীফের সঙ্গে আলোচনা করা। ওই বৈঠকের সূত্র জানিয়েছেন, ক্ষমতাসীন সরকার ব্যাপকহারে অর্থনৈতিক রিলিফ বা ত্রাণ দেয়ার দিকে দৃষ্টি দেয়া নিয়ে আলোচনা করেছে। একই সঙ্গে কঠোর অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলেছেন তারা, যা দীর্ঘমেয়াদী হবে। সূত্র বলেছেন, লন্ডনের অজ্ঞাত একটি স্থানে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা হয় এই বৈঠক। সেখানে আগাম নির্বাচন ও বিভিন্ন ইস্যুতে মতামত চান নওয়াজ শরীফ। তবে বৈঠকে প্রথমেই অর্থনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের বিষয়ে একমত হয়েছেন সবাই। তারপরই জোটের অন্য শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করা হবে।
বৈঠকের পর দ্য নিউজকে তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ ও তার প্রতিনিধি দলের অন্য মন্ত্রীরা পাকিস্তানের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে নওয়াজ শরীফের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তুলে ধরেছেন। উপরন্তু দলীয় প্রধানের কাছে সরকারের এজেন্ডা ও পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরা হয়। আওরঙ্গজেব আরও বলেন, পিটিআই সরকারের কাছ থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার অর্থনীতি পেয়েছে পিএমএলএন এবং তার জোটের শরিকরা। দেশে জনগণ যে বিরাট দুর্ভোগে তা পর্যালোচনা করা হয়েছে বৈঠকে।
এ ছাড়া ৩ থেকে ১২ই এপ্রিল পর্যন্ত পিটিআই নেতারা যেসব সাংবিধানিক নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আওরঙ্গজেব বলেন, দ্বিতীয় দফার বৈঠক বা চূড়ান্ত বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এই বৈঠক বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা। তারপরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। এ সময় একজন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন্ করেন, এসব ইস্যুতে কি ভার্চ্যুয়াল আলোচনা করা যেত না? পুরো সরকারের কেন লন্ডন সফরে যেতে হলো। জবাবে আওরঙ্গজেব বলেন, লন্ডনের মিটিংয়ে বিস্ময়ের কিছু নেই। নওয়াজ শরিফ হলেন আমাদের ‘কায়েদ’। নওয়াজ শরীফ ও শেহবাজ শরীফের মধ্যে দীর্ঘদিন বৈঠক হয় না।