গ্যাসের দাম বেড়ে ২ চুলার বিল এখন ১০৮০ টাকা
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বাসার রান্নায় ব্যবহৃত দুই চুলায় এখন থেকে মাসে ১ হাজার ৮০ টাকা ও এক চুলায় দিতে হবে ৯৯০ টাকা। আর প্রিপেইড মিটার গ্রাহকের প্রতি ইউনিটে (ঘনমিটার) দেবেন ১৮ টাকা, তাঁদের খরচ বাড়বে ৪৩ শতাংশ। জুন মাস থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে, যা জুলাইয়ে পরিশোধ করবেন গ্রাহকেরা।
গ্যাসের নতুন দাম রোববার (০৫ জুন) ঘোষণা করেছে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। পরিবহন খাতে ভাড়া স্থিতিশীল রাখতে গাড়িতে ব্যবহৃত সিএনজির দাম বাড়ানো হয়নি। তবে সবচেয়ে বেশি প্রায় ২৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম। বৃহৎ শিল্পে বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ।
নতুন ঘোষিত দাম অনুসারে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে ১১ টাকা ৯০ পয়সা হয়েছে গড়ে। সিএনজির দাম আগের মতো ৩৫ টাকাই থাকছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা ২ পয়সা করা হয়েছে। তবে শিল্প উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ-ক্যাপটিভের গ্যাসের দাম ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা করা হয়েছে। বৃহৎ শিল্পে প্রতি ইউনিটের নতুন দাম ১১ টাকা ৯৮ পয়সা, মাঝারি শিল্পে ১১ টাকা ৭৮ পয়সা এবং ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পে করা হয়েছে ১০ টাকা ৭৮ পয়সা। চা–বাগানে নতুন দাম ১১ টাকা ৯৩ পয়সা, বেড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ। আর সার কারখানায় ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা করা হয়েছে।
হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে ব্যবহৃত বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহকেরা এখন থেকে প্রতি ইউনিটে দেবেন ২৬ টাকা ৬৪ পয়সা, তাঁদের খরচ বাড়ছে ১৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
গ্যাসের দাম ঘোষণা করেন বিইআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু ফারুক। তিনি বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশের অর্থনীতিও হুমকির মুখে। কিন্তু সরকারের সঠিক উদ্যোগের কারণে এখনো অর্থনীতি ভারসাম্য হারায়নি। রপ্তানি শিল্প ও জনজীবনে যাতে প্রভাব না পড়ে, এসব বিবেচনায় নিয়েই গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা করা হয়েছে।
কমিশনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পেট্রোবাংলার সঙ্গে বিতরণ ও সঞ্চালন কোম্পানি গত জানুয়ারির প্রথম দিকে গড়ে ১১৭ শতাংশ দাম বাড়ানোর আবেদন করে। এরপর গত ২১ থেকে ২৪ মার্চ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ৭ এপ্রিল পর্যন্ত সবার কাছ থেকে লিখিত মতামত নেওয়া হয়। দাম বাড়ানোর পরও ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। এর মধ্যে সরকার ভর্তুকি দেবে ৬ হাজার কোটি টাকা। জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল থেকে দেওয়া হবে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আর গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফা থেকে সমন্বয় করা হবে আড়াই হাজার কোটি টাকা।
অনলাইনে দাম ঘোষণার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিইআরসির সদস্য মকবুল ই ইলাহি, মো. বজলুর রহমান, মো. কামরুজজামান।