কালীগঞ্জে ‘প্রেম’ করে বিয়ের পর ‘পরকিয়া’ করে ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে লাপাত্তা প্রবাসীর স্ত্রী!

নিজস্ব সংবাদদাতা : ‘প্রেম’ করে বিয়ের প্রায় চার বছর পর পরকিয়ায় লিপ্ত হয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পিযুস কান্তি ঘোষের সঙ্গে পালিয়েছে এক প্রবাসীর স্ত্রী!
গত শুক্রবার (১২ আগষ্ট) সিলেট যুগলটিলা ইসকন মন্দিরে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতার সাথে পালিয়ে যায় প্রবাসীর স্ত্রী।
পালিয়ে যাওয়া প্রবাসীর স্ত্রী বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের বেতুয়া এলাকার নিমাই চন্দ্র দাসের মেয়ে মেয়ে সুতপা দাস (২২)। তার স্বামী জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানী এলাকার অমৃত দাসের ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী অর্পন দাস। সুতপা দাস গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে গণিত বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত।
পিযুস কান্তি ঘোষ কালীগঞ্জের চান্দাইয়া এলাকার লিটন চন্দ্র ঘোষ কালির ছেলে। সে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়াও পিযুস কান্তি ঘোষ ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) এর সক্রিয় সদস্য এবং তুমুলিয়া ইউনিয়নের বান্দাখোলা রাধা মাধব ইসকন মন্দিরের অর্থ ও প্রচার সম্পাদক বলে জানা গেছে।
তারা সকলেই ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন)-এর অনুসারী।
উভয়ের পারাবারিক সূত্রে জানা গেছে,
প্রেম ও বিয়ে: সুতপা দাস ২০১৭ সালে গাজীপুর মহিলা কলেজে একাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত থাকা অবস্থায় ইসকন সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সিঙ্গাপুর প্রবাসী অর্পন দাসের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে অর্পন দাসের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য সুতপা দাস গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপর পারিবারিকভাবে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর তাদের বিয়ে হয়। এতে ইসকনের সক্রিয় সদস্য পিযুস কান্তি দাস তাদের সহায়তায় করে। বিয়ের এক মাস পর অর্পন দাস সিঙ্গাপুর চলে যায়। সে সময় সুতপা দাস স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করতে থাকে। এরমধ্যে সুতপা দাস এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরে গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে গণিত বিভাগে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ক্লাস করতে থাকে। এরমধ্যে স্বামীর সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল।
বেড়াতে গিয়ে পালিয়ে যায়
প্রায় চার বছর পর সিঙ্গাপুর থেকে গত ৯ আগষ্ট ছুটিতে দেশে ফিরে অর্পন দাস। পরে স্ত্রী সুতপা দাসসহ উভয় পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে সিলেটে বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ১১ আগষ্ট বাড়ি থেকে রওনা হয় অর্পন দাসসহ সকলে। সে সময় তাদের বিভিন্ন মন্দিরে বেড়াতে সাহায্য করতে সুতপা দাসের অনুরোধে পিযুস কান্তি দাসকে সঙ্গে নেয়া হয়। সিলেটে পোঁছে প্রথমে তারা সকলেই সচি রঙ্গন ইসকন মন্দির পরিদর্শন করে। এরপর ১২ আগষ্ট (শুক্রবার) তারা সকলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত ইসকনের যুগলটিলা মন্দিরে যায়। পরে তারা সকলে সিলেট দরগা গেইট এলাকার আবাসিক হোটেল নির্জনে অবস্থান নেয়। গোটা ভ্রমণে পিযুস কান্তি দাস ও সুতপা দাসের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে হোটেলে থাকা অবস্থায় তাদের সাবধান করা হয়। এরকিছু সময় পর শুক্রবার আনুমানিক দুপুর ২টার দিকে নিচে যাওয়ার কথা বলে হোটেলের কক্ষ থেকে বের হয় সুতপা দাস। কিছুক্ষণ পর তাকে খোঁজে না পেয়ে পিযুস কান্তি দাসের কক্ষে খোঁজ করে তাকেও পাওয়া যায়নি। এরপর চারদিকে খোঁজাখুঁজি করার এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফোন করে জানায় তারা দু’জন কালীগঞ্জ ফিরে আসতেছে। অন্যদেরকেও চলে আসার অনুরোধ করে সে সময় তারা।
থানায় জিডি
অপরদিকে ওইদিন (শুক্রবার) রাতেও তারা বাড়ি ফিরেনি। পরদিন শনিবার সকালে অর্পন দাস বাদী হয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন (জিডি নাম্বার ১৩২৪)। এরপর ওইদিন দুপুর ১২ টার দিকে তারা সকলে বাড়ির উদ্দেশ্যে সিলেট ত্যাগ করে।
বন্ধের দিন কোর্ট ম্যারেজ
এরমধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে পিযুস কান্তি দাস ও সুতপা দাস শনিবার (১৩ আগষ্ট) বিকেলে সরকারি বন্ধের দিনেই গাজীপুরের কোন এক আইনজীবীর মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজ করে বিয়ে করেছে।
যা জানা যাচ্ছে
বান্দাখোলা রাধা মাধব ইসকন মন্দির সূত্রে জানা গেছে, পিযুস কান্তি দাসকে মন্দিরের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও তাকে ইসকনের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার জন্য ইসকনের সদর দপ্তরে অবিহিত করা হবে।
বক্তব্য
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অর্পন দাস বলেন, পিযুস কান্তি দাস আমাদের বিশ্বস্ত ধর্মীয় পরমর্শ ছিলো। সে এরকম একটি কাজ করেছে যা ক্ষমা করার মত নয়। এছাড়াও সুতপা দাসকে আর ফিরিয়ে আনার কোন সুযোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, সরকারি বন্ধের দিনেই তারা নাকি গাজীপুরের কোন এক আইনজীবীর মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজ করে বিয়ে করেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত অফিসিয়ালি কোন। কাগজপত্র পাইনি।
পিযুস কান্তি দাস ও সুতপা দাসের মোবাইল নাম্বার বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরো জানতে……
কালীগঞ্জে সন্তান রেখে ভাগিনার সঙ্গে লাপাত্তা মামী!