পূর্বাচলে ২৫’শ বিঘা জমিতে ভরাট কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আবাসন প্রকল্প ‘পূর্বাচল মেরিন সিটিতে’ বালু ভরাট কার্যক্রমের ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।
‘জনস্বার্থে’ করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
বালু ভরাট বন্ধ রাখার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং জেলা সমাজ কল্যাণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের সমন্বয়ে একটি কমিটি করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। স্থানীয়দের জমি দখল করে অবৈধভাবে বালু ভরাটের অভিযোগ তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে ওই কমিটিকে।
রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়নের সাত মৌজায় মেরিন গ্রুপ অব কোম্পানি লিমিটেডের মাটি ভরাট বন্ধে বিবাদীদের নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট।
ভূমি সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, কৃষি সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, পরিবেশ ও বন জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রূপগঞ্চ সাব-রেজিস্ট্রার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) দাউদপুর ইউনিয়ন, রূপগঞ্জ থানার ওসি এবং মেরিন গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতের রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তানজিম রাফীদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।
ফাইল ফটো
আইনজীবী মাহিন পরে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মেরিন গ্রুপ অব কোম্পানি লিমিটেডের ‘পূর্বাচল মেরিন সিটি’ প্রকল্পের নামে রূপগঞ্জ থানার দাউপুর ইউনিয়ন এলাকায় আড়াই হাজার বিঘা জমিতে ‘অবৈধভাবে’ বালু ভরাট করা হয়েছে। আদালত শুনানি শেষে রুল জারি করেছে এবং বালু ভরাটের ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এই আইনজীবী বলেন, “জেলা প্রশাসক, রূপগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সাব-রেজিস্ট্রার, দাউদপুর ইউনিয়নের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং রূপগঞ্জ থানার ওসিকে বালু ভরাট বন্ধ করতে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন।”
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “মেরিন সিটি প্রকল্প এলাকায় বালু ভরাট কাজ বন্ধ আছে, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের একটি প্রতিবেদন আমরা উপস্থাপন করেছি। কিন্তু রিটকারীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সেখানে বালু ভরাট চলছে। শুনানি শেষে আদালত তিন মাসের জন্য বালু ভরাট বন্ধ এবং এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলেছেন।”
স্থানীয়দের কৃষি জমি, পুকুর ও বাড়িঘর ‘অবৈধভাবে’ দখল করে সেখানে বালু ভরাট কার্যক্রম চলছে বলে জাতীয় ও স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে
ওই এলাকার বাসিন্দা এ কে এম তজিম উদ্দিনসহ ১২ জনের পক্ষে আইনজীবী মাহিন এম রহমান গত ১০ অগাস্ট এ রিট আবেদন করেন। স্থানীয়দের কৃষি জমি, পুকুর ও বাড়িঘর ‘অবৈধভাবে দখল করে’ মেরিন সিটি প্রকল্পের নামে বালু ভরাট কার্যক্রম নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনও তারা আদালতে দিয়েছন।