গুমের তালিকায় থাকা ৩৫ জনকে আমরা নিজেরাই খুঁজছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় গুমের শিকার হওয়া ৭৬ জন মানুষের একটি তালিকা সরকারকে দিয়েছিল। এর মধ্যে ১০ জন বিএনপি’র কর্মী। তারা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। আর ৩৫ জনকে আমরা নিজেরাই খুঁজছি। বিভিন্ন রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, ধ্বংসাত্মক কাজ, মানুষ হত্যা, সম্পদ পুড়িয়ে দেয়ার জন্য তাদের খুঁজছি। একজন আবার জেলে অবস্থান করছে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান ও নিরাপত্তা: ভিশন-২০৪১’ শীর্ষক সেমিনার তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ। সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সূত্র দিয়ে বলা হয়, গত ৫ বছরে দেশে ২ হাজার ৮০৩টি হিন্দু বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করে আয়োজকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা সম্পত্তি বিনষ্ট করেছে বিস্তারিত তালিকা দেবেন।
একই অনুষ্ঠানের শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ও মিয়ানমারের ছোড়া গোলা নিয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
বাবুল আক্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হেফাজতে নির্যাতন নিয়ে সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার যে অভিযোগ করেছেন সেটি বাস্তবসম্মত কি না, তা তদন্ত হলেই বোঝা যাবে। যেহেতু পিবিআই’র কাছে তদন্তাধীন, তাই তদন্ত শেষ করার আগে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। অভিযোগ বাস্তবসম্মত কি না, সেটা তদন্ত হলেই বোঝা যাবে। পিবিআই’র ওপর আমাদের ভরসা রয়েছে। হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয়জনের নামে চট্টগ্রামের আদালতে মামলার আবেদন করেছেন আলোচিত সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। মন্ত্রী বলেন, পিবিআই যতগুলো অনুসন্ধান করেছে, সবই বাস্তবসম্মত এবং অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তারা অনুসন্ধান করেছে। ৩০ বছর আগের খুনের মামলায়ও তারা আসামি চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করেছে। পিবিআই যেটা করবে সেটা ভুল করবে না বলে আমার বিশ্বাস। বাবুল আক্তার যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন আমার মনে হয় তদন্তের পর আপনারা সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। যে সংস্থা তদন্ত করছে তার প্রধানের বিরুদ্ধেই অভিযোগ। সে ক্ষেত্রে তদন্তে গাফিলতির আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাবুল আক্তার অত্যন্ত চতুর মানুষ। কাজেই সে কখন কী বলে সেটা তার ব্যাপার। এখানে আমার মন্তব্য নেই।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে থানায় থানায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে তালিকা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তারা অনেক সময় অনেক কথা বলেন। এগুলো বিএনপি’র আরেকটা কৌশল। মিয়ানমার ফের গোলা ফেললে আন্তর্জাতিক ফোরামে জানাবো: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মিয়ানমারের ছোড়া গোলা ফের পড়লে আন্তর্জাতিক ফোরামে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বলেন, আমরা মিয়ানমারকে প্রথমে ডেকে বলেছি। এরপর যদি (গুলি) আসে বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে জানানো হবে। মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে দু’-একটি গোলা আমাদের সীমান্তের কাছাকাছি এসে পড়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমাদের বিজিবি (সীমান্তরক্ষী বাহিনী) তাদের বিজিপি’র (সীমান্তরক্ষী বাহিনীর) কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মেসেজ দেয়া হয়েছে, সবকিছু বলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সব পর্যায়ে প্রতিবাদ করেছি। আমরা মনে করি শিগগির তারা সংযত হবে। তাদের গোলাগুলি যেন এদিকে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আমরা তাদের বলেছি। মিয়ানমার বারবার একইভাবে গোলা ফেলছে। সেক্ষেত্রে বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে তোলা হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা মিয়ানমারকে প্রথমে ডেকে বলেছি। এরপর যদি আসে আমরা বিষয়টি জানাবো।