উদ্বোধনী ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে হারলো স্বাগতিক কাতার

গাজীপুর কণ্ঠ, খেলাধুলা ডেস্ক : বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে কখনও প্রথম ম্যাচে হারেনি স্বাগতিক দল। কাতার বিশ্বকাপেই প্রথম এই ঘটনা ঘটলো। উদ্বোধনী ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারলো স্বাগতিকরা। দুটো গোলই করেছেন এনার ভ্যালেন্সিয়া।

১৯৩০ সালের ১৩ জুলাই বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হলেও স্বাগতিক দেশ উরুগুয়ের খেলা পড়ে ১৮ জুলাই। পেরুর সঙ্গে সেদিন উরুগুয়ে ১-০ গোলে জয় পায়। তারপর থেকে আর কোনও স্বগতিক দেশ প্রথম ম্যাচে হারেনি। সেই হিসাবে বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাস কাতার নিজেদের বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই ভেঙে দিয়েছে।

রোববার আল বায়াত স্টেডিয়ামে রাত ১০টায় শুরু হওয়া ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলপোস্টে বল ঢুকিয়ে দেন ইকুয়েডরের ভ্যালেন্সিয়া। তবে ভিএআর (ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি) তা নাকচ করে দেন। একের পর এক আক্রমণে প্রবল চাপ ধরে রাখে ইকুয়েডর।

ম্যাচের ১৫ মিনিটে পেনাল্টি পায় ইকুয়েডর। ভ্যালেন্সিয়া কাতারের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে গোলরক্ষক তাকে অবৈধভাবে আটকান। পেনাল্টি পায় ইকুয়েডর। এবার বল জালে জড়িতে ভুল করেননি ভ্যালেন্সিয়া।

ম্যাচের ৩১ মিনিটে আবারও গোল পায় ইকুয়েডর। এবারও গোলদাতা ভ্যালেন্সিয়া। তিনি প্রিসিয়াদোর শটে বল হেড করে পোস্টে ঢুকিয়ে দেন। তার দুর্দান্ত হেডার ইকুয়েডরকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেয়। এই ব্যবধানে বিরতিতে যায় উভয় দল।

বিরতির অবশ্য গোল শোধের বেশ চেষ্টা করে স্বাগতিকরা। যদিও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি তারা। উভয় দল আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ করলেও দ্বিতীয়ার্ধে গেলের দেখা পায়নি কেউই। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইকুয়েডর।

অন্যদিকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইকুয়েডরের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ। তবে ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার বাইরন কাস্তিলোকে ‘অযোগ্য’ খেলোয়াড় হিসেবে ফিফার কাছে অভিযোগ করেছিল চিলি ও পেরু। পরে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।

গ্রপ ‘এ’-তে দেশটির প্রতিপক্ষ ইকুয়েডর, সেনেগাল, নেদারল্যান্ডস। আগামী ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় সেনেগাল ও ২৯ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে রাত ৯টায় বাকি দুটি ম্যাচ খেলবে।

প্রসঙ্গত, প্রথমবারের মতো এবারের আসরের আয়োজক দেশ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্র কাতার। বিশ্বকাপ শুরুর ইতিহাসে এই প্রথম মরুর বুকে বসেছে বিশ্বকাপের আসর। পশ্চিমা বলয়ে আটকে থাকা ফিফার কাছ থেকে অনুমোদন পেতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি কাতারকে। বিশ্বকাপের দায়িত্ব পেয়েই সবাইকে চমকে দেওয়ার কথা বলেছিল দেশটি। সমালোচকদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ‌‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ মঞ্চায়নে তাক লাগিয়ে দেয় কাতার।

বিপুল অর্থ ব্যয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে কাতার ছাড়িয়ে গেছে আগের সব বিশ্বকাপকে। বিশ্বকাপ আয়োজনে কাতার খরচ করেছে ২২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত রাশিয়া বিশ্বকাপ খরচ হয়েছিল মাত্র ১১৬ কোটি ডলার! সম্পদশালী এই দেশ সাতটি স্টেডিয়ামই নতুন করে তৈরি করেছে। এমনকি বিশ্বকাপ উপলক্ষে মেট্রোরেলের একটি রুটও তৈরি করে ফেলেছে তারা।

এ ছাড়া ফুটবলার ও দর্শকের নানা সুবিধা দিতে বিভিন্ন আবাসন হোটেল,পার্ক, বিনোদনকেন্দ্রসহ অনেক কিছুই নির্মাণ করেছে দেশটি।

বিশ্বকাপের সময় মানুষের যাতায়াতের সুব্যবস্থার জন্য আকাশপথে ফ্লাইটসংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি আমূল পরিবর্তন এনেছে দেশটির যোগাযোগব্যবস্থায়। দোহা মেট্রো, লাইট ট্রাম প্রকল্পের পাশাপাশি আছে প্রায় চার হাজার বাস। বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিমানবন্দরে আলাদা টার্মিনালও তৈরি করেছে কাতার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button