নির্বাচনী বছরে বড় বাজেট, বড় ঘাটতি

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নির্বাচনী বছরে সাত লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অবশ্য এর বড় একটি অংশে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিয়ে যোগান দেয়ার পরিকল্পনা সরকারের।
বৃহস্পতিবার (০১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আয়-ব্যায়ের পরিকল্পনা উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাজেটের প্রকাশিত দলিল অনুযায়ী, আসছে অর্থবছরে সরকার মোট সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ব্যয় করবে। এর মধ্যে রাজস্ব ও বিদেশি অনুদান থেকে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৯০০ কোটি টাকা আসবে বলে অনুমাণ করছে সরকার। বাকি ৩৩ শতাংশ মেটানো হবে দেশি বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিয়ে। জিডিপির অনুপাতে ঘাটতির হার দাঁড়াচ্ছে পাঁচ দশমিক দুই শতাংশ।
বাড়ছে বহর
চলতি অর্থবছরে সরকার ছয় লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিল৷ সেই হিসেবে আসছে বাজেট ১২ ভাগ বড় হচ্ছে৷ কিন্তু অন্য বছরের ধারাবাহিকতায় বিদায়ী অর্থবছরেও ঘোষিত বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন হচ্ছে না৷ সংশোধন করে তা নামিয়ে আনা হয়েছে ছয় লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটিতে৷ সেই হিসেবে নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে ১৫ দশমিক তিন শতাংশ৷
করের বোঝা
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকা৷ যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি৷ তবে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার বড় একটি অংশই আদায় না হওয়ার শঙ্কা থাকছে৷ কেননা চার লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার মধ্যে মার্চ পর্যন্ত আদায় হয়েছে মাত্র দুই লাখ ৬৮ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা৷ সেক্ষেত্রে নতুন অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্চ৷
ঋণ নির্ভরতা
বাজেটে আকার বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঋণের বহরও৷ এর মধ্যে নিট এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা সরকার ঋণ নিতে চায় বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে৷ যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৮ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা বেশি৷ বাকি এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেয়া হবে দেশের ভিতরের বিভিন্ন খাত থেকে৷ এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে৷ গত বছর প্রস্তাবিত বাজেটে এক লাখ ছয় ৩৩৪ কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা থাকলেও বছর শেষে তা বাড়িয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা করা হয়েছে৷ অর্থাৎ, আগামী অর্থবছরে এর চেয়েও প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বেশি নিতে চায় সরকার৷ যদিও ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এত ঋণ নিলে তা বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে সতর্ক করছেন অর্থনীতিবিদরা৷
প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা
‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’, বাজেট বক্তৃতার এমন শিরোনাম দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী৷ বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে সাত শতাংশ৷ সেই সঙ্গে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছয় শতাংশে আটকে রাখা যাবে বলেও প্রত্যাশা করা হয়েছে৷ সাময়িক হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার সোয়া ছয় শতাংশ আর গড় মূল্যস্ফীতি সাড়ে সাত শতাংশ বলে বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে৷