ডিসি নিয়োগে পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় ডিসি নিয়োগে সরকার কোনো পক্ষপাতিত্ব করেনি বলে দাবি করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) কিন্তু একদিনে হয় না। মাঠ প্রশাসনে তাদের দুই বছর কাজ করতে হয়। তাই যাচাই-বাছাই করেই ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। চাইলেই পলিটিক্যাল কাউকে ডিসি নিয়োগ করতে পারব না। ফিটলিস্ট তৈরি করে যোগ্যতা অনুযায়ী ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়।

রোববার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে গণমাধ্যমে কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপে যোগ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রশাসনের ভাবমূর্তি প্রতিনিয়তই উন্নত হচ্ছে, ভালো হচ্ছে, এ ভাবমূর্তির উন্নয়ন হওয়ার গতিধারা যেন ঠিক থাকে সেজন্য আমরা এই কাজগুলো করি। যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের কতটুকু প্রশিক্ষিত করেছি, সে অনুযায়ী তাদের পদায়ন করে থাকি। সেজন্য একথা বলার কোনো সুযোগ নেই, কারণ রাতারাতি কেউ ডিসি হয় না। আমি চাইলেই পলিটিক্যাল কাউকে ডিসি করতে পারব না।

জেলা প্রশাসক নিয়োগে বৈষম্য ও স্বজনপ্রীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু কর্মকর্তাকে ডিসি হিসেবে পদায়নের পর তুলে নেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মাঠ প্রশাসন বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে। একটি মানুষকে যখন ডেস্কে কাজ করতে দেখেন, তার এক ধরনের পারফরমেন্স থাকে। মাঠ পর্যায়ের কাজের ধরন কিন্তু আরেক রকম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যাচাই-বাছাই করেই ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এদের সংখ্যা কিন্তু কম, দুই/একজন বিভিন্ন কারণে ফেল করেন। তারা হয়তো ওখানে গিয়ে অ্যাডজাস্ট করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো আমাদের বিরক্তির কারণও হয়ে দাঁড়ায়।

ফরহাদ বলেন, আমরা চেয়েছি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনে আমাদের কর্মকর্তারা চমৎকারভাবে কাজ করতে পারেন এবং একইসঙ্গে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে চালিয়ে নিতে পারেন।

সম্প্রতি ডিসি থেকে উঠিয়ে আনা কর্মকর্তাদের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যাদের তুলে নেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ২০ জন ছিল ২২ ব্যাচের। আশা করছি, এ মাসের মধ্যেই তারা যুগ্ম-সচিব হয়ে যাবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে কিছু অভিযোগ ছিল, অভিযোগগুলো দেখেছি। জনমনে বেশকিছু অস্বস্তি আছে, সেজন্যই আমরা তুলে নিয়েছি। দুই/একজনকে তুলেছি, আমাদের মনে হয়েছে তারা ডেস্কে যেভাবে কাজ করেছেন ওখানে গিয়ে সেভাবে পারছেন না। নিয়মের বাইরে, আইনের বাইরে, বিধিবিধানের বাইরে কিন্তু কোনো কিছু করিনি। ডিসি কিন্তু একদিনে হয় না। মাঠ প্রশাসনে তাদের দুই বছর কাজ করতে হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের পলিসি রয়েছে, আমরা জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই। সেটার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সেটি ব্যক্ত করেছেন। আমরা কিন্তু সেদিকে যাচ্ছি। সেটির জন্য কিন্তু সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া আছে যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো অতিকথন বলা যাবে না, যেটি কি না প্রশাসনে ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সুন্দরভাবে আপনারা কাজ করবেন। প্রফেশনালিজম যেটি সেটি শো করবেন। আপনাদের যে উন্নত ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে সেই ট্রেনিং অনুযায়ী জনগণকে সেবা করবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে কাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে সেটি জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কর্মকাণ্ডগুলো কন্টিনিউ করতে হবে।

ফরহাদ হোসেন বলেন, নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার যেভাবে চাইবেন সেভাবে চলবে। আমাদের তরফ থেকে আমরা একটি নির্বাচন সুন্দর করার জন্য যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার ততটুকু করছি।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পিএস নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। বাছাই করে সেরা অফিসারদের সেখানে দেওয়া হয়েছিল। ভালো কর্মকর্তাদের ডিসি করা হচ্ছে। এখানে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button