ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করলো কানাডা, একই পথে দিল্লিও

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আবারও সমস্যার মুখে। কানাডা জানিয়েছে, তারা এক ভারতীয় কূটনীতিককে দ্রুত দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে ওই কূটনীতিকের নাম তারা প্রকাশ করেনি। অভিযোগ উঠেছে, গত জুন মাসে এক বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যার সঙ্গে ওই কূটনীতিক জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। তবে ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এরপর ভারতও দিল্লিতে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠায়। ভারতও কানাডার একজন সিনিয়র কূটনীতিককে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে তাকে ভারত ছাড়তে হবে।

কানাডার বক্তব্য, এই কাজ তাদের দেশের সার্বভৌম অস্তিত্বের বিরোধী। কোনোভাবেই এমন ঘটনা তারা মেনে নেবে না। সে কারণেই ওই কূটনীতিককে দ্রুত দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছিল। তাতে প্রায় নিশ্চিত যে ওই ভারতীয় কূটনীতিক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যদিও তদন্ত এখনো চলছে।

স্থানীয় প্রশাসনও জানিয়েছে, তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। ঘটনা প্রমাণ হলে তা দুই দেশের সম্পর্কে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছে কানাডা।

গত জুন মাসে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় একটি গুরুদ্বারের সামনে হত্যা করা হয় বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে। অভিযোগ, আলাদা শিখ রাষ্ট্রের জন্য তিনি লড়াই করছিলেন এবং মানুষকে উত্তেজিত করছিলেন। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সঙ্গে কারা যুক্ত তা স্পষ্ট হয়নি। কিন্তু যতদিন গেছে, ততই এর সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকের সম্পর্ক স্পষ্ট হয়েছে।

ভারত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জি-২০ বৈঠকে কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, কানাডা শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মুক্তক্ষেত্র হয়ে উঠছে। ভারত বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছে না। শুধু তা-ই নয়, ভারত জানিয়েছে, কানাডার অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং অসত্য। প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ করা হচ্ছে।

বস্তুত, কানাডায় বিপুল অংশের ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিক বাস করে। এর মধ্যে একটি বড় অংশ শিখ। বিভিন্ন সময়ে ওই শিখদের ভেতর থেকে পৃথক শিখ রাষ্ট্রের দাবি ওঠে। নিজ্জর ছিলেন ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা।

খালিস্তানি আন্দোলন নতুন নয়। এর আগে পাঞ্জাবে এই আন্দোলন বিরাট চেহারা নিয়েছিল। ইন্দিরা গান্ধীর আমলে অপারেশন ব্লু স্টার হয়েছিল পাঞ্জাবে। স্বর্ণ মন্দিরের ভেতরে ঢুকে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মেরেছিল ভারতীয় সেনা। পরে শিখ দেহরক্ষীর গুলিতেই মৃত্যু হয় ইন্দিরার। গত কয়েক দশকে এই আন্দোলন অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে। কিন্তু কানাডায় এখনো বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর একটি বড় অংশ আছে বলে ভারতের অভিযোগ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button