রণক্ষেত্র পরিণত পল্টন, মহাসমাবেশ বন্ধ: আগামীকাল সারা দেশে হরতাল

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর কাকরাইল মোড়ের কাছ থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পুরো পল্টন এলাকা। এর জেরে আগামীকাল সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
সংঘর্ষের সময় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছেন বিএনপির কর্মীরা। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে। এতে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছেন।
সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। বিএনপির মিডিয়া সেল এ খবর নিশ্চিত করেছে।
এর আগে সমাবেশ শুরুর পর পরিস্থিতি খারাপ হলে এক পর্যায়ে বিএনপির নেতারা বক্তব্য স্থগিত রাখেন। পরে দলটির সিনিয়র নেতারা কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থান নেন।
এদিকে সকাল থেকেই বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর একটা থেকে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে।
সমাবেশ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে তাদের এই চক্রান্ত সফল হবে না।
পুলিশের পক্ষ থেকে ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, তাদের ওপর আগে হামলা হয়েছে। আত্মরক্ষার্থে তারা টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছেন।
এর আগে বেলা একটার দিকে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ের পশ্চিম দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিএনপি কর্মীরা কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর এবং পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও আগুন দেন।
বেলা দেড়টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাকরাইল মোড়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
অন্যদিকে বিএনপি কর্মীরা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে মিন্টু রোডের কাছাকাছি থাকা যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করলে পুলিশ অ্যাকশনে যায়। ওই সময় বিএনপি কর্মীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
এর আগে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বহনকারী একটি বাস ও দুটি পিকআপে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশ করছে বিএনপি। অন্যদিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রধান দুই দলকে সমাবেশের অনুমতি দিলেও জামায়াতে ইসলামীকে শাপলা চত্বরে ডাকা সমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে জামায়াতের হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়েছেন নটরডেম কলেজের সামনে। সেখানেও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বড় তিন দল ছাড়াও ছোট ছোট বেশ কয়েকটি দল একই দিন রাজধানীতে সমাবেশ করছে। এতে রাজধানীজুড়ে বিরাজ করছে টান টান উত্তেজনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া অবস্থানে রয়েছে।