ব্যাংকে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : অর্থনৈতিক সংকট ও মুদ্রাস্ফীতি সত্ত্বেও ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরে কোটি টাকার বেশি আমানতকারী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৩,৩২২টি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি। এসব অ্যাকাউন্টে মোট আমানতের প্রায় ৪২.৪% টাকা জমা আছে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল এক লাখ ১৩ হাজার ৫৮৬টি। যা ২০২২ সালে ছিল এক লাখ নয় হাজার ৯৪৬টি।

২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাস প্রকোপ শুরুর সময় দেশের ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার বেশি থাকা অ্যাকাউন্টের (ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যক্তিগত গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ছিল ৯ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। যা ডিসেম্বরে বেড়ে হয়েছে ৯ লাখ ৫৪ হাজার কোটি টাকা।

এই সময়ে ব্যবসায়ীদের অ্যাকাউন্টে ছিল ২ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা। যা ডিসেম্বরে হয় ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা।

কোটিপতি অ্যাকাউন্ট বৃদ্ধি পেলেও দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তুলনামূলকভাবে অল্প পরিমাণ অর্থ রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশ ১৫.৩৫ কোটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১১.১৬ কোটি অ্যাকাউন্টের প্রতিটিতে ৫,০০০ টাকার কম রয়েছে।

এক কোটি টাকার বেশি থাকা অ্যাকাউন্ট মোট অ্যাকাউন্টের মাত্র ০.০৭৫%। কিন্তু এই অ্যাকাউন্টে আমানতের ৪২.৪% রয়েছে।

ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানত দাঁড়িয়েছে ১,৭৪৯,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি থাকা অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৭ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা।

এক কোটি টাকার বেশি আমানত থাকা অ্যাকাউন্টের ১,৮১২টি অ্যাকাউন্টের প্রতিটিতে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে, যা সবমিলিয়ে ২ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।

২০২৩ সালের এক কোটি টাকার বেশি থাকা অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষে ছিল ৬ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা।

কোটি টাকার বেশি থাকা অ্যাকাউন্টের পরিমাণ গত পাঁচ বছরে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৮ সালে যেখানে এমন অ্যাকাউন্ট ছিল ৭৫ হাজার ৫৬৩টি। তা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টিতে।

ব্যাংকাররা বলছেন, কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সবগুলোই ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট নয়। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক অ্যাকাউন্টও আছে। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট আছে।

তারা বলছেন, দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, যার মধ্যে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক ঋণের বৃদ্ধি, ডলারের সঙ্কট, বৈদেশিক রিজার্ভের পতন এবং জ্বালানি ঘাটতি, ধনী ব্যক্তিদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগের কারণে অ্যাকাউন্টে আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে দেশে ধনকুবেরের (৫০ লাখ ডলারের বেশি সম্পদের অধিকারী) সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৪.৩% হারে। যা এই সময়ে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। বহুজাতিক আর্থিক পরামর্শ দানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ এক্স এর প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছিল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button