রূপগঞ্জে জমি ব্যবসা নিয়ে পুরোনো দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষ: ৮ জন গুলিবিদ্ধ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়ায় জমি ব্যবসা নিয়ে পুরোনো দ্বন্দ্বে আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিশুসহ অন্তত ৮ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামে কায়েতপাড়ার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন ৯ বছরের শিশু মো. আরিফ, মুক্তার হোসেন (৬০), মো. আকবর (২৪), তাজেল (৩৬), জয়নাল (৩৫), শামীম (২৫), নুর হোসেন (২৪) ও রোমান (২০)। তাঁরা সবাই মোশারফ হোসেনের অনুসারী বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় রফিকুলের অনুসারী কারও আহত হওয়ার খবর জানা যায়নি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আহত ব্যক্তিরা শটগানের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকের বরাতে জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির পক্ষে জমি বেচাকেনা ব্যবসা ও দখল নিয়ে রফিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাই নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মিজানুর রহমানের সমর্থকদের সঙ্গে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। পাশপাশি বাড়ির বাসিন্দা এই দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় সময়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরে গত রোববার রাতে রফিকুল ইসলামের অনুসারী নাওড়া এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হোসেন নামে এক তরুণকে মোশারফের অনুসারীরা পিটিয়ে আহত করেন। এ ঘটনার জেরে সোমবার সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষ দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে কথা বলতে মোশারফ হোসেনের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাঁর ছেলে নিরব হোসেন অভিযোগ করে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, রফিকুল ইসলামের লোকজন সোমবার সকালে বিনা উসকানিতে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাঁদের বাড়িঘর ঘেরাও করে হামলা চালান। এর প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের লোকজনের ওপর শটগানের গুলি ছোড়া হয়। এতে তাঁদের কয়েকজন লোক গুলিবিদ্ধ হন। তবে রোববার রাতে নাজমুল নামের এক তরুণকে মারধর করার হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন নিরব।

বাড়িঘরে হামলার কথা অস্বীকার করেছেন মিজানুর রহমান। তাঁর দাবি তিনি ঢাকায় আছেন। এমন কোনো সংঘর্ষের বিষয়ে তাঁর জানা নেই।

মিজান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমি শুনেছি নাজমুল নামের গ্রামের এক নিরীহ ছেলেকে গত রাতে মারধর করেন মোশারফ ও তাঁর লোকজন। এতে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সকালে গ্রামবাসীর ওপর আবারও মোশারফের লোকজন হামলা চালিয়েছেন বলে শুনেছি। হামলায় গ্রামবাসীর কয়েকজন আহত হয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) আবির হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পুরোনো বিরোধ থেকে রাতে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জেরে সকালে তাঁরা সংঘর্ষে জড়ান। এ ঘটনায় আটজন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন বলে জেনেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নাওড়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বেলা তিনটা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।’

 

সূত্র: প্রথম আলো

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button