ট্রেন চলাচল বন্ধ, গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বিকল্প হিসেবে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ আটটি রুটে টিকিট কাটা যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল নয়টার দিকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে এক জরুরি বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে আজ ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ হতে সারাদেশে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রেলের বিকল্প হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটসমূহে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীগণ তাদের ক্রয়কৃত রেল টিকিটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং এসকল স্থান হতে ঢাকাতে এই সার্ভিসের মাধ্যমে আসতে পারবেন।

পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু থাকবে বলেও বার্তায় জানানো হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সংবাদমাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকীর পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, যেসব ট্রেনের যাত্রা বাতিল হবে সেসব ট্রেনের টিকিটের টাকা যাত্রীদের ফেরত দেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের দাবি বহুলাংশে মেনে নেওয়া সত্ত্বেও তারা তাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থেকে সরে আসেনি। এ কারণে আজ ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে। রেলের যাত্রা বাতিল হলে আগের কেনা টিকিটের টাকা বাংলাদেশ রেলওয়ে ফেরত প্রদান করবে।

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন রানিং স্টাফরা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আহ্বান উপক্ষো করে তাদের এই কর্মবিরতিতে কমলাপুরসহ বিভিন্ন স্টেশনে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

সারাদেশে প্রায় ১৭০০ রানিং স্টাফ কর্মচারী রয়েছে। এই রানিং স্টাফরা হলেন গার্ড, ট্রেনচালক (লোকোমাস্টার), সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই)। দৈনিক কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে ১৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হয়। এজন্য দূরত্ব অনুযায়ী তাদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়, যাকে বলা হয় মাইলেজ। এটা তাদের বেতনের অংশ। প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন পরিচালনা করলে তারা মূল বেতনের একদিনের বেসিকের সমপরিমাণ টাকা অতিরিক্ত পেতেন। এছাড়া মূল বেতনের হিসাবে অবসরকালীন ভাতা যা হয়, তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৭৫ শতাংশ টাকা বেশি দিয়ে তাদের পেনশন দেয়া হতো।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছে।

Related Articles

Back to top button