
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় তাঁর নিজের জেলা কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার এবং উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শক পদমর্যাদার দুজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ মে) রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগর সংবাদ মাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একইসঙ্গে মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনা তদন্তে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মতিউর রহমান শেখকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি ইনামুল হক সাগর প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এবং পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের আরেকটি সূত্রে জানা যায়, ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার এবং এসবির সহকারী উপপরিদর্শক মো. সোলায়মান এবং কিশোরগঞ্জে আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আজহারুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ছাত্র–জনতার অভুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের নয় মাস পর বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, আবদুল হামিদ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল রাত ১১টার দিকে সাধারণ যাত্রী হিসেবে শাহজালাল বিমানবন্দরে যান তিনি। এ সময় তার মুখে মাস্ক ও মাথায় ক্যাপ ছিল। পরে ইমিগ্রেশনের প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে তাঁকে দেশ ছাড়ার সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। এসবির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিদেশ যাওয়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসার কথা বলেছেন।
গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের আরও অনেককে আসামি করা হয়।
এই পরিস্থিতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা। তাঁকে দেশত্যাগে সহায়তাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা এবং বিদেশ থেকে আবদুল হামিদকে ফিরিয়ে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেধে দিয়ে গণঅধিকার পরিষদ বলেছে, সেটা করতে না পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। এই দাবিতে আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে দলটি।
এদিকে বৃহস্পতিবার দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আবদুল হামিদের দেশত্যাগে সহায়তাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। আর যদি শাস্তির আওতায় না আনতে পারেন, তাহলে তিনি দায়িত্ব থেকে চলে যাবেন।
সূত্র: প্রথম আলো