আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের হামলার ভয়ে ভারতের ব্ল্যাকআউট ঘোষণা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক আক্রমণে পাকিস্তানের ভেতরে কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস হওয়ার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ইসলামাবাদ। এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত, যার অংশ হিসেবে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণ ব্ল্যাকআউট।

ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ৮ মে রাত ৯টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গুরুদাসপুর জেলায় বিদ্যুৎ-আলোক সংযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাকিস্তানের সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কায় এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযানে আজাদ কাশ্মীর ও পাকিস্তানের ভেতরে অন্তত ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, এই হামলায় লাহোরে স্থাপনকৃত পাকিস্তানি HQ-9 এয়ার ডিফেন্স মিসাইল লাঞ্চারগুলোও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উল্টোদিকে, পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বলছে, ভারত তাদের দেশের অন্তত ছয়টি স্থানে ২৪টি আঘাত হেনেছে, যার জবাবে পাকিস্তান বিমানবাহিনী পাল্টা হামলায় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান, একটি ড্রোন এবং একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করেছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

সীমান্তে সম্ভাব্য আরও হামলার আশঙ্কায় ভারত ইতোমধ্যেই রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং গুজরাটে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, জনসমাবেশসহ সব ধরনের গণপরিসর। সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, এবং সীমান্তের প্রতিটি প্রবেশপথে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।

ভারতের দাবি, কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সংঘটিত একটি সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবেই তারা ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করেছে। মূল লক্ষ্য ছিল জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তাইয়্যেবা-র মূল ঘাঁটিগুলো, যেগুলো যথাক্রমে বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকে এলাকায় অবস্থিত।

এরই মধ্যে পাঞ্জাব রাজ্য সবচেয়ে আগে প্রতিক্রিয়া জানায়। পাকিস্তানের সঙ্গে ৫৩২ কিমি দীর্ঘ সীমান্ত ভাগ করা রাজ্যটি তাদের সব সীমান্তবর্তী জেলাকে হাই অ্যালার্টে রেখেছে। পাঞ্জাবের মন্ত্রী অমন অরোরা জানান, জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং প্রতিটি সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলায় রাজ্য পুলিশকে দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান তার নির্ধারিত মাদকবিরোধী প্রচার কার্যক্রম বাতিল করেছেন এবং এসবিএস নগর ও জলন্ধরে সফর স্থগিত করেছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে প্রশাসন।

অন্যদিকে, বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) দাবি করেছে, ৭ ও ৮ মে রাতের মধ্যে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্তে এক পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ভারতের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি গোপনে সীমান্ত অতিক্রম করে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button