ভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে পাকিস্তানের হামলা

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ভারতের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত পাকিস্তান ভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করে একাধিক হামলা চালিয়েছে।
গত মাসে ভারতশাসিত কাশ্মীরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের উপর প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারত বুধবার পাকিস্তানের অভ্যন্তরে একাধিক “সন্ত্রাসী শিবিরে” অভিযান চালায়। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পাকিস্তান এসব হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে উভয় পক্ষই সীমান্তে গোলাগুলি ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সংঘর্ষে ইতোমধ্যে অন্তত ৪০ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের পর এই সংঘর্ষই সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তান কাশ্মীর সীমান্তে একাধিকবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে।
“ড্রোন হামলা সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে,” সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি “ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর” বলে মন্তব্য করেছেন। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, তারা ভারতের কাশ্মীর বা সীমান্ত পেরিয়ে কোনো ধরনের হামলা চালায়নি।
কাশ্মীর ও সীমান্তবর্তী এলাকায় সতর্কতা
বৃহস্পতিবার রাতে কাশ্মীরের সাম্বা অঞ্চলে “বড় ধরনের অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা” ব্যর্থ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। শুক্রবারও উরি সেক্টরে গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে আরও তিনজন।
অমৃতসরে রাতভর সাইরেন বাজানো হয় এবং জনগণকে ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়। ফলে শহরের হোটেলগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে।
গুজরাটের ভূজ ও রাজস্থানের বিকানের এলাকায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বিশ্বশক্তিদের শান্তি আহ্বান
উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন বিশ্বশক্তি দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা চাই এই উত্তেজনা যত দ্রুত সম্ভব প্রশমিত হোক। তবে আমরা দেশগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি না।”
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক চিরকালই উত্তপ্ত। কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করেই দুই দেশের মধ্যে তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দুটি হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর অঞ্চল এখনো দুই দেশের মধ্যে বিরোধের মূল কেন্দ্রবিন্দু রয়ে গেছে।
সূত্র : রয়টার্স