অবৈধ সনদে টাকশালের প্রকৌশলী শামসুজ্জামান: হয়েছে বিপুল অর্থ-বৈভরের মালিক
গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : টাকশালের প্রকৌশলী শামসুজ্জামান একই বছর (১৯৯০ ইং) কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ডিপ্লোমা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী (পাস) সনদ লাভ করেছেন। এটা বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষাবোর্ডসহ সকল শিক্ষাসনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুন-আইন পরিপন্থী। অথচ এই অবৈধ সনদ দিয়েই প্রকৌশলী শামসুজ্জামান উপসহকারী প্রকৌশলী থেকে সহকারী প্রকৌশলী ও পরে নির্বাহী প্রকৌশলী পদোন্নতি লাভ করেছেন। অবৈধ পথ দিয়ে চাকরিজীবন শুরু করে তিনি একই পথ ধরে শণৈঃ শণৈঃ উন্নতি করেছেন।
১২এপ্রিল (শুক্রবার) দৈনিক মুক্ত সংবাদ- পত্রিকায় প্রকাশিত ‘টাকশালের প্রকৌশলী শামসুজ্জামানের রিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ সকল তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিমুলতলী হাউজিং সোসাইটিতে যৌথ বাড়ি, একটি সাত তলা নিজের বাড়ি, শহরের পৌর সুপার মার্কেটের পাশে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ভবনের ৪০০টি শেয়ারের মালিক, শিমুলতলী-সালনা সড়কের পাশে ১০ কাঠা জমি, দামি গাড়ি হাকনো – দৃশ্যমান কয়েক কোটি টাকা মূল্যমানের এসব সম্পত্তির বাইরে বিক্রমপুর, মুক্তাগাছা ও মধুপুরে তার বিপুল বিত্ত-বৈভবের খোঁজ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বহুল আলোচিত-বিতর্কিত এই শামসুজ্জামান ১৯৯৫ সালে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেসে (টাকশাল) উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি নেন। আবেদনে তিনি ৮৩ সালে এসএসসি, ৮৫ সালে এইচএসসি ও ৯০ সালে ডিপ্লোমা পাসের সনদ দাখিল করেন। ২০০০ সালে তিনি সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে পদোন্নতি পান। আরও পদোন্নতির আশায় পরের বছর (২০০১ সাল) তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি স্নাতক (পাস) সনদ দাখিল করেন। সেই সনদ অনুযায়ী তিনি তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশের বছরই (১৯৯০সাল) তিনি স্নাতকোত্তর হন। যা তার চাকরির আবেদনে উল্লেখ ছিল না। একই বছর পৃথক দুইটি ডিগ্রী অর্জন শুধু বেআইনি নয়। আইন অনুযায়ী দুই সনদই বাতিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ টাকশাল কর্তৃপক্ষ সে পথে না হেঁটে উল্টো ৭ বছর পর দাখিলকৃত সনদটি আমলে নিয়ে শামসুজ্জামানকে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে পদোন্নতি দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
যদিও তথ্য গোপন করে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে টাকশালের প্রবিধান অনুযায়ী ইতোমধ্যে এক কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হয়েছেন। শামসুজ্জামানের ক্ষেত্রে অন্যায়ই যেন আইন। প্রতিষ্ঠানে আইন, প্রবিধান যেন অন্যদের ক্ষেত্রে প্রযোগ্য – শামসুজ্জামান এসবের উর্ধ্বে। এর আরও বড় প্রমান পাওয়া যায় তাঁর বিনা অনুমতিকে বিনা ছুটিতে মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহন করা সত্ত্বেও পরীক্ষা পাসের সনদটি ব্যক্তিগত নথিতে সংযোজন করা। আর এর ভিত্তিতে শামসুজ্জামানের আরেকটি পদোন্নতির আয়োজন চলছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এসব অনিয়ম ও অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন সহকারী পরিচালক বলেন, অভিযোগ সত্য হলে শামসুজ্জামান চাকরিচ্যুত হওয়ার মতো অপরাধী। অভিযোগ পেলে দুদক এ ব্যাপারে তদন্ত করবে।