ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধের নির্দেশনা

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক বক্তব্য এবং ব্যক্তিবিশেষের নামে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির আগের বৈঠকে এ সংক্রান্ত সুপারিশ আসে। বুধবার (২৩ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কমিটির ১৩তম বৈঠকে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

বুধবারের বৈঠকের কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, আগের বৈঠকে দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানসহ ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। একপর্যায়ে কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান ওয়াজ মাহফিলে বিতর্কিত আলোচনার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি আসন্ন শীত মৌসুমে ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিবিশেষের নামে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত রাখার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন। তার সঙ্গে একমত পোষণ করে কমিটির সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হিংসা, বিদ্বেষ বা উসকানিমূলক কোনও বক্তব্য রাখা যাবে না। একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রচার করার মাধ্যমে বাধার সৃষ্টি করছে।’

পরে বিষয়টি বৈঠকের সুপারিশ আকারে নিয়ে আসা হয়। বুধবারের বৈঠকে ওই সুপারিশের অগ্রগতি প্রতিবেদন দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—আসন্ন শীত মৌসুমে ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিবিশেষের নামে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত রাখার বিষয়ে পুলিশ অধিদফতরের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান বলেন, ‘শীতকালে আমাদের দেশে ওয়াজ মাহফিল বেশি হয়। ধর্মীয় প্রচারের জন্য এসব ওয়াজ মাহফিল হওয়ার কথা। ইদানীং দেখেছি, ওয়াজ মাহফিলে বক্তারা ধর্মীয় প্রচারের চেয়ে রাজনৈতিক কথা বলেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সমালোচনা করেন। আমরা এটা বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে বলেছিলাম। মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে। দেখি কতটা কার্যকর হয়।’

তিনি জানান, এর আগে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ২০২০ সালে ওয়াজ মাহফিলে লাউড স্পিকার বন্ধের সুপারিশ করেছিল।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওয়াজ মাহফিলে বক্তাদের বয়ানে সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য প্রদান, জঙ্গিবাদে উৎসাহ দেওয়া, ধর্মের নামে বিভিন্ন উপদল ও শোবিজ তারকাকে নিয়ে বিষোদ্গার, নারীদের পর্দা করা নিয়ে কটূক্তিসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে ছয়টি সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (ইফাবা), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সব বিভাগীয় কমিশনারের কাছে তা পাঠানো হয়েছিল।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button