রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্যপদ খারিজ

গাজীপুর কণ্ঠ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কংগ্রেস দলের নেতা রাহুল গান্ধীকে দেশটির সংসদ সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ আগে পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেল উৎপল কুমার সিং এক গেজেট নোটিফিকেশান জারি করে এই ঘোষণা করেছেন।
গেজেট নোটিফিকেশনে লেখা হয়েছে, “সুরাতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ওয়েনাড সংসদ আসন থেকে লোকসভায় প্রতিনিধিত্বকারী রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়ে গেল।”
যেদিন রাহুল গান্ধী দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, অর্থাৎ ২৩ মার্চ, সেদিন থেকেই তার সংসদ সদস্যপদ খারিজ হল ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)(ই) এবং জন প্রতিনিধিত্ব আইনের আট নম্বর ধারা অনুযায়ী, এটাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই গেজেট নোটিফিকেশনে।
বৃহস্পতিবার গুজরাতের সুরাত শহরের আদালত রাহুল গান্ধীকে একটি ফৌজদারী মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে দুবছরের জেলের সাজা শোনায়।
তবে ওই সাজার ওপরে ৩০ দিনের জন্য স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।
বিজেপির একনায়কতান্ত্রিক মনোভাব: কংগ্রেস
ভারতের জন-প্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী দুবছর জেলের সাজা হলেই সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়ে যায় আপনা থেকেই।
যদি পরে আপিল করে তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণও করতে পারেন, কিন্তু সংসদ সদস্য পদ আর ফিরে পাবেন না, এমনটাই মত আইনজ্ঞদের।
কংগ্রেস এই নিয়ে আজ শুক্রবার ভারতীয় সময় বিকেল পাঁচটায় সংবাদ সম্মেলন করবে, তবে দলটির নেতা কে সি ভেনুগোপাল বলেছেন, “যেদিন রাহুল গান্ধী আদানি এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন, সেদিনই তাকে চুপ করিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছিল। এটা স্পষ্টতই বিজেপি সরকারের গণতন্ত্র-বিরোধী, একনায়কতান্ত্রিক মনোভাব।“
কার মানহানি করার সাজা পেলেন রাহুল গান্ধী?
রাহুল গান্ধী ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার করার সময়ে বলেছিলেন নিরভ মোদী, ললিত মোদী, নরেন্দ্র মোদী সহ মোদী পদবীধারীদের সবাই কী করে ‘চোর’ হয়!
নিরাভ মোদী হচ্ছেন ভারতের পলাতক হীরা ব্যবসায়ী। আর ললিত মোদী হচ্ছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের সাবেক প্রধান যার উপর আজীবনের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।
তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছিল পুর্ণেশ মোদী নামে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির এক আইনপ্রণেতার অভিযোগের ভিত্তিতে, যিনি বলেছিলেন যে, মি. গান্ধীর মন্তব্য সমগ্র মোদী সম্প্রদায়ের জন্য মানহানিকর।
আইন বিশেষজ্ঞ গৌতম ভাাটিয়া এক টুইটে বলেছেন যে, “কোন সাধারণ একটি শ্রেণীর ব্যক্তিদের নিয়ে উদ্ধৃতি”-এক্ষেত্রে পদবী-“শাস্তিযোগ্য নয় যদি কোন এক বিশেষ ব্যক্তি এটা প্রমাণ করতে না পারে যে সেটি আসলে তার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত।”
“যদি কেউ বলে যে ‘সব আইনজীবীরাই চোর’, তাহলে আমি একজন আইনজীবী হিসেবে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে পারবো না যদি এটা প্রমাণ করতে না পারি যে এটি আমাকে উদ্দেশ্য করেই বলা হয়েছে,” বলেন মি. ভাটিয়া।