বিচারাধীন মামলার সংবাদ প্রকাশে বিরত থাকতে গণমাধ্যমকে পরামর্শ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : সুপ্রিম কোর্ট বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে খবর প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে গণমাধ্যমকে পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রশাসন শাখা।

প্রশাসন শাখা থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ই-মেইলে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে কোনো কোনো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তাদের চ্যানেলে এবং কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া তাদের পত্রিকায় বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত”।

“এমতাবস্থায়, বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করা হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো”।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো: গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য পাঠিয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ভুঁইয়া।

কেন এই নির্দেশনা?

সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, “আদালতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় কিংবা আদালতের ওপর মানুষের আস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন কিছু যাতে না হয় সেটিই আসলে বলা হয়েছে”।

কিন্তু জনস্বার্থে প্রতিনিয়ত যেসব রিট বা মামলা হয় কিংবা আলোচিত যেসব ঘটনার বিচারিক প্রক্রিয়ায় মানুষের আগ্রহ থাকে, সেসব মামলার ক্ষেত্রে কী হবে – এমন এক প্রশ্নে মিস্টার রহমান বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি।

জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় প্রায়ই আদালতে তুলে ধরেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা

মনজিল মোরশেদ বলছেন যে তাঁর ধারণা হাইকোর্ট বিভাগে একটি মামলার বিষয়ে বৃহস্পতিবার কিছু টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে ব্রেকিং নিউজ কিংবা স্ক্রল আকারে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রেক্ষাপটেই আদালতের নির্দেশনাটি এসেছে।

তিনি বলেন, একটি বিচারাধীন বিষয়ে আপিল বিভাগ থেকে কোনো আদেশ বা রায় আসার আগেই নানা সংবাদ প্রচার করেছে কয়েকটি টিভি ও অনলাইন, যেটি মোটেই উচিত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আদালত আদেশ দেয়ার আগেই সংবাদ প্রচার অনেকের কাছে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হতে পারে। অর্থাৎ গণমাধ্যম মামলার খবর মানুষকে জানাতে পারে, কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে এমন কোনো সংবাদ দিতে পারে না, যা সেই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়।

বৃহস্পতিবারের ঘটনা

আদালতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে গিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী। তখন সেখানে অন্য মামলার শুনানি চলছিলো।

অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আপিল বিভাগে গিয়েছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ।

মিস্টার আরিফ পরে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে চলা একটি মামলার বিষয়ে আপিল বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “আমরা সবাই সমস্বরে এটাকে (আপিল বিভাগের কাছে অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদন) সমর্থন জানিয়েছি। কারণ অস্বাভাবিক আদেশে আদালতের যে ইমেজ ও মর্যাদা, তা ব্যাহত হয়, ক্ষুণ্ন হয় এবং অবনমিত হয়। সেজন্য আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি যে বিষয়টা রাষ্ট্রপতির কাছে বা আদালত যেভাবে বিবেচনা করেন, সেভাবে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেছি”।

বিষয়টি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে দিন শেষে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয়।

সূত্র: বিবিসি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button