শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় পুলিশের গুলিতে এক দোকান মালিকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলার আবেদন সরাসরি এজাহার হিসেবে রেকর্ড (গণ্য) করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

গুলিতে নিহত মুদি দোকান মালিক আবু সায়েদের ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’ এস এম আমীর হামজার (শাতিল) দায়ের করা মামলা গ্রহণ করে ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) এ আদেশ দেন।

দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দায়ের করা এ মামলা আদালত আমলে নেওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে।

শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ এবং যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।

পাশাপাশি পুলিশের অজ্ঞাতনামা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারি কর্মকর্তাদের এ মামলায় আসামি করার আবেদন করেছেন মামলার বাদী।

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন অগাস্টের শুরুতে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়। জেলায় জেলায় সহিংসতায় মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রায় তিনশ মানুষের প্রাণ যায়।

৫ অগাস্ট আন্দোলনারীদের ঢাকামুখী লংমার্চের মধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগ করেন এবং পালিয়ে ভারতে চলে যান। এরপর তার বিরুদ্ধে এটাই প্রথম মামলার উদ্যোগ।

বাদী এস এম আমীর হামজা (শাতিল)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওই সব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র জনতা নিহত ও আহত হন। গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। তখন রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, নিহত সায়েমকে তার গ্রামের বাড়িতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নতুন বস্তি প্রধান হাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। তাই বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি মামলাটি করেন।

মামলার অভিযোগে বাদী আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।

Related Articles

Back to top button