আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার ‘সাংবাদিক’ ধরা খেল পুলিশের হাতে!

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : পুলিশসহ সবার চোখ ফাঁকি দিতে ‘সেফ গার্ড’ হিসেবে সাংবাদিকতা পেশা বেছে নেয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য ও সর্দার মো. হোসেন আলী (৩২)। ডাকাতি করার আগে অভিনব কৌশল হিসেবে গলায় আইডি কার্ড ঝুঁলিয়ে ক্যামেরা হাতে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খোঁজ নিতেন- কোথায় কোন বাড়িতে ডাকাতি করলে ভালো টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যাবে।

বৃহস্পতিবার সোনারগাঁ উপজেলার একটি ডাকাতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বারদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দৈনিক দেশ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক পরিচয় দানকারী ডাকাত হোসেন আলীকে গ্রেফতারের পর এমন ভয়ঙ্কর তথ্য পায় পুলিশ।

গ্রেফতার হোসেন আলী রূপগঞ্জ উপজেলার বরফা আঁটিপাড়া এলাকার মৃত সিদ্দিকের ছেলে।

সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ১৫ জুন গভীর রাতে সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের ভিটিকান্দি গ্রামের মনজুর হাজির বাড়ির গেটের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে বাড়ির সদস্যদের হাত-পা বেঁধে ডাকাতি করে তারা। এসময় ওই বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয় ডাকাতরা। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানার একটি ডাকাতি মামলা করা হয়। পরে প্রযুক্তির সাহায্যে অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত বুধবার (২৬ জুন) পাঁচ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারদের আদালতে পাঠানো হলে তারা সবাই সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ভিটিকান্দি গ্রামের মনজুর হাজির বাড়িতে ডাকাতির কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এসময় কথিত সাংবাদিক হোসেন আলী তাদের দলের সর্দার বলে জানায় তারা।

পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাতে সোনারগাঁ উপজেলার বারদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত হোসেন আলীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে সাংবাদিক পেশার আইডি কার্ড, ডাকাতি করা মালামাল, নগদ টাকা ও মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত হোসেন জানায়, তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে আরও তিনটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। তার দলের সদস্যরা ডাকাতি করে যে মালামাল পায় তার অর্ধেক ভাগ সে একাই পায়, বাকি অর্ধেক অন্যরা ভাগ করে নেয়।

ডাকাত হোসেন পুলিশকে জানায়, হোসেন আলী সাংবাদিক হওয়ার কারণ একটাই লোকজন যাতে আমাকে অপরাধী না ভাবে। সে জন্যই দৈনিক দেশ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রথম বিশ হাজার টাকা দেই কর্তৃপক্ষকে এবং পরবর্তীতে প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা এবং দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে নবায়নের জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button