অবৈধ হস্তক্ষেপ ও বকেয়া বিলের দায়ে যমুনা গ্রুপের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : গ্যাসের বকেয়া বিল ও মিটারে অবৈধভাবে হস্তক্ষেপের অভিযোগে যমুনা গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শিল্প ও ক্যাপটিভ পাওয়ারসহ আটটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) চন্দ্রা, সফিপুর ও কোনাবাড়ীতে অবস্থিত ওই কারখানাগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক (জোনাল মার্কেটিং অফিসার) মোস্তফা মাহবুব।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডাইং, যমুনা ডেনিমস, শামীম স্পিনিং মিলস, শামীম কম্পোজিট, যমুনা স্পিনিং মিলস ও পেগাসাস লেদার।
তিতাস জানিয়েছে, এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডাইং ও যমুনা ডেনিমসে বকেয়া, মিটারে অবৈধ হস্তক্ষেপ, বুস্টার ব্যবহার ও আন্তঃসংযোগের অভিযোগে শিল্প ও ক্যাপটিভ পাওয়ার উভয় গ্যাস সংযোগই বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
শামীম স্পিনিং মিলস, শামীম কম্পোজিট ও যমুনা স্পিনিং মিলসে মিটারে অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ ও বকেয়ার অভিযোগে ক্যাপটিভ পাওয়ারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
আর বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় পেগাসাস লেদারে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
তিতাসের ব্যবস্থাপক মোস্তফা মাহবুব সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “এদের দীর্ঘ বকেয়া ছিল, ২০০৮ সালের। বকেয়া উদ্ধারের জন্য একটি কারখানায় আমরা যাই। গিয়ে দেখি মিটার টেম্পারিং করা।
“নিউমেটিক ভাল্ব অপারেটিং এর মাধ্যমে মিটারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। নিউমেটিক ভাল্বের কারণে মিটার বন্ধ হয়ে যায়, তখন বিল হয় না।”
“মিটারে অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ৯০ শতাংশই বিল হয় না। মাত্র ১০ শতাংশ বিল হয়”, বলেন ওই কর্মকর্তা।
মোস্তফা মাহবুব বলেন, “একটা কারখানার পর অন্যগুলোয় গেলাম। দেখলাম প্রায় সবগুলোতেই একই অবস্থা। তখন আমরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলাম।”
মিটার টেম্পারিংয়ের হিসাব ছাড়াই ২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার বকেয়া রয়েছে জানিয়ে তিতাসের এই কর্মকর্তা বলেন, কত টাকার গ্যাস টেম্পারিং করা হয়েছে, সেটা দ্রুতই তারা হিসাব কষে আদায়ের চেষ্টা করবেন।
“গ্যাস বিপণন আইনের ধারা অনুযায়ী, তাদের কাছ থেকে পূর্ণ ক্যাপাসিটি পেমেন্টের অর্থ আদায় করা হবে এবং আদায়যোগ্য অর্থের অর্ধেকের কাছাকাছি জরিমানা করা হবে।”
এ বিষয়ে যমুনা গ্রুপের পরিচালক (মার্কেটিং, সেলস অ্যান্ড অপারেশনস) আলমগীর আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমি এই তথ্যটা জানি না।”
যমুনা গ্রুপের মহা-ব্যবস্থাপক এ কে এম কামাল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “কিছু বকেয়া আছে। বকেয়ার জন্য এটা করেছে। আমরা আবেদন করে দিচ্ছি। উনারা বলেছেন, খুব দ্রুতই কানেকশন দিয়ে দেবেন…পরিশোধ করলেই…।”
টেম্পারিংয়ের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে আমাদের ধারণা নেই।”
কয়েক দশকের পুরনো দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের মালিকানায় বড় ধরনের ২৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে যমুনা গ্রুপের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।
আবাসন, বস্ত্র, তৈরি পোশাক, প্রকৌশল, রসায়ন, বেভারেজ, চামড়া, প্রসাধনী, হাসপাতাল, হোটেল, শপিংমল, মিডিয়াসহ বিভিন্ন খাতে ছড়িয়ে রয়েছে তাদের ব্যবসা।