অ্যাস্ট্রাজেনেকা করোনার টিকায় ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : করোনাভাইরাসের নাম মনে করলে অনেকের গা শিউরে ওঠে। এ রোগ এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে এলেও শুরুতে একে মহামারি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। করোনার সংক্রমণে থমকে গিয়েছিল সারা বিশ্ব। তবে সময় পাল্টেছে। করোনা এখন আর মহামারিরূপে নয়। তবে এবার সামনে এসেছে করোনার টিকা কোভিশিল্ডের ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, করোনার টিকা কোভিশিল্ডের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, এ টিকার ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ টিকার কারণে ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ (টিটিএস) হতে পারে।

টিটএস বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার একটি রোগ। যার ফলে রক্তে জমাট বাঁধতে পারে। কর্তৃপক্ষের এমন স্বীকারোক্তির পর টিকা গ্রহণকারীরা কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেননা বাংলাদেশ ও ভারতের অনেকে এ টিকা গ্রহণ করেছেন।

ভারতের সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঈশ্বর গিলাদা জানিয়েছেন, থ্রোম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক সিনড্রোম হলো বিরল। কিন্তু এর প্রভাব গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাত্র ০.০০২ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ প্রতি ৫০ হাজার লোকের মধ্যে একজনেরও কম মানুষ এমন ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ন্যাশনাল কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের কো-চেয়ারম্যান ডা. রাজীব জয়দেব জানান, এ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুধু প্রথম ডোজ নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেছে। এরপর আর দেখা যায়নি। এ ছাড়া ভারতে ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ হওয়ার কোনো খবর নেই বলেও জানান তিনি।

হায়দরাবাদের একটি স্বনামধন্য বেসরকারি হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট চিকিৎসক সুধীর কুমার বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

তিনি জানান, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকলে টিকা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তা দেখা দিতে পারে। সাধারণত টিকা নেওয়ার এক থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার কথা। তবে এরপর দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ায় চিন্তার কোনো কারণ নেই।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মাসিউটিক্যালের যৌথ প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা কোভিশিল্ডে ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।

তারা জানান, এ টিকার পাশ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’। যার ফলে মানুষের রক্তে জমাট বাঁধে। টিটিএসের কারণে মানুষের মস্তিষ্কসহ শরীরের জটিল কিছু জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে।

এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। করোনার এ টিকা উৎপাদন করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশকে এটি প্রয়োগ করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button