হাসপাতাল ছেড়ে ছেলের বাসায় উঠছেন খালেদা জিয়া

গাজীপুর কণ্ঠ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৭ দিন পর হাসপাতালের ছাড়পত্র পেয়েছেন। শুক্রবার রাত তিনটায় (লন্ডনের সময় রাত ৯টা) দ্য লন্ডন ক্লিনিক থেকে তিনি সরাসরি বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় উঠবেন। আপাতত বাসায় চলবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা। প্রয়োজন হলে ফলোআপের জন্য আসবেন হাসপাতালে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে লিভার প্রতিস্থাপন এখনই সম্ভব হচ্ছে না।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

ডা. শাহাবুদ্দির তালুকদার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ম্যাডাম লন্ডনের সময় রাত ৯টা হাসপাতালে থেকে তারেক রহমানের বাসায় উঠবেন। তার শারিরীক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা লিভার সার্জারি করতে চাননি।

তিনি বলেন, ম্যাডামের হার্টের সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখন মূল সমস্যা কিডনিতে। এভারকেয়ার হাসপাতালে যে চিকিৎসা ছিল তা লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা প্রথমে সাপোর্ট করেননি। তারপর নতুনভাবে কিডনির চিকিৎসা শুরু হয়। কয়েকদিন আগে ক্রিয়েটিনিন মাত্রা (কিডনির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে) বর্ডার লাইন ক্রস করে। এতে অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। এরপর আরও নতুন কিছু চিকিৎসার ফলে এখন অনেকটা রিকোভারি হয়েছে।

কবে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া এমন প্রশ্নের উত্তরে এই চিকিৎসক জানান, বলা যায় মূল চিকিৎসা শেষ। এখন ফলোআপ করতে হবে। কবে দেশে ফিরবেন এটা ম্যডামের ওপর নির্ভর করছে। তবে আমি হয়তো এক সপ্তাহ পর দেশে ফিরে আসব। আমার মা অসুস্থ। ওনার ৮৬ বছর বয়স। অন্য সফরসঙ্গীরা থাকবেন। আমরা সবাই তারেক রহমান সাহেবের বাসার পাশেই একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকছি। তিনিই এগুলো ব্যবস্থা করেছেন। আর ডা. জাহিদ হাসপাতালেই থেকেছেন এতোদিন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘সব কিছু ঠিক থাকলে, রিপোর্টগুলো আসলে, ইনশাল্লাহ, ম্যাডামের হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যায় ছুটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

তিনি জানান, বাসায় ফিরলেও ম্যাডাম সার্বক্ষণিক প্রফেসর জন প্যাট্টিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রস- এই দুইজনের সার্বিক তত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন থাকবেন। এবং ম্যাডামের যে মেডিকেল বোর্ড আছে তারাও থাকবেন। অর্থাৎ লন্ডনে হাসপাতালের যে নিয়ম সেই নিয়ম মেনেই উনার চিকিৎসা চলবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন কেমন আছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ম্যাডাম এখন সার্বিকভাবে অনেকটা ভালো আছেন। কিন্তু উনার যে কথাটা আমরা আগেও বলেছি যে, উনার লিভার প্রতিস্থাপন করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত আসা যায়নি। চিকিৎসকদের বক্তব্য হচ্ছে, হয়তো আগে হলে নতুন চিন্তাভাবনা করা যেতো, দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আগামীতে লন্ডন ক্লিনিকের মেডিকেল বোর্ডের যে চিকিৎসা অর্থাৎ ওষুধের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের যে চিকিৎসা চলছে, সেটা অব্যাহত থাকবে। এখন পর্যন্ত এখনাকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এবং জন হপকিংন্সের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাসহ সবাই মোটামুটি একমত। একই সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে উনি এবং উনার পরিবার এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দোয়া চেয়েছেন।

গত ৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ারঅ্যাম্বুলেসে নিয়ে পরদিন যুক্তরাজ্যের ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হয়। এই হাসপাতালটির লিভার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।

Related Articles

Back to top button